বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১২

সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯






সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯

( ২০০৯ সনের ১৬ নং আইন )

[২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯]



     
কতিপয় সন্ত্রাসী কার্য প্রতিরোধ এবং উহাদের কার্যকর শাস্তির বিধানসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন


       যেহেতু কতিপয় সন্ত্রাসী কার্য প্রতিরোধ এবং উহাদের কার্যকর শাস্তির বিধানসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
       সেহেতু এতদ্বারা নিণ্মরূপ আইন করা হইল :-





প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক




সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, ব্যাপ্তি ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে।

     (২) সমগ্র বাংলাদেশে ইহার প্রয়োগ হইবে।

     (৩) ইহা ১১ জুন ২০০৮ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
















সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(১) "অপরাধ" অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন দণ্ডনীয় কোন অপরাধ;

(২) "আগ্নেয়াস্ত্র" অর্থ যে কোন ধরনের পিস্তল, রিভলবার, রাইফেল, বন্দুক বা কামান, এবং অন্য যে কোন আগ্নেয়াস্ত্রও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩) "আদালত" অর্থ দায়রা জজ এর বা, ক্ষেত্রমত, অতিরিক্ত দায়রা জজ এর আদালত;

(৪) "কারাদণ্ড" অর্থ দণ্ডবিধির ধারা ৫৩ তে উল্লিখিত যে কোন বর্ণনার কারাদণ্ড;

(৫) "ফৌজদারী কার্যবিধি" বা "কার্যবিধি" অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

(৬) " তফসিল" অর্থ এই অধ্যাদেশের তফসিল;

(৭) "দণ্ডবিধি" অর্থ Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860);

(৮) "দাহ্য পদার্থ" অর্থ এমন কোন পদার্থ যাহাতে আগুন ধরাইবার বা আগুন তীব্রতর করিবার বা ছড়াইবার স্বাভাবিক উচ্চ প্রবণতা রহিয়াছে, যেমন- অকটেন, পেট্রোল, ডিজেল, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সি,এন,জি), গান পাউডার, এবং অন্য যে কোন দাহ্য পদার্থও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে ;

(৯) "বাংলাদেশ ব্যাংক" অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O.No. 127 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক;

(১০) "ব্যাংক" অর্থ ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাংক; এবং অন্য কোন আইনের অধীনে ঋণ গ্রহণ, বিতরণ এবং অর্থের বিনিময় করিতে অনুমতিপ্রাপ্ত কোন আর্থিক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১১) "বিচারক" অর্থ দায়রা জজ, অতিরিক্ত দায়রা জজ বা, ক্ষেত্রমত, সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক;

(১২) "বিশেষ ট্রাইব্যুনাল" অর্থ ধারা ২৮ এর অধীন গঠিত কোন সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবু্যনাল;

(১৩) "বিস্ফোরক দ্রব্য" অর্থ-

(ক) গানপাউডার, নাইট্রো-গ্লিসারিন, ডিনামাইট, গান-কটন, ব্লাসটিং পাউডার, ফুঁসে উঠা (fulminate) পারদ বা অন্য কোন ধাতু, রঙ্গিন আগুন (colored fire) এবং বিস্ফোরণের মাধ্যমে কার্যকর প্রভাব, বা আতসবাজির প্রভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবহৃত বা উৎপাদিত অন্য যে কোন দ্রব্য যাহা উপরি-উল্লিখিত পদার্থসমূহের সদৃশ হউক বা না হউক; এবং

(খ) বিস্ফোরক সামগ্রী তৈরির যে কোন পদার্থ ও কোন বিস্ফোরক পদার্থের মাধ্যমে বা সহযোগে বিস্ফোরণ সৃষ্টি, বা ব্যবহারের অভিপ্রায়ে রূপান্তরিত করিবার, বা সহায়তার জন্য ব্যবহৃত, কোন যন্ত্র, হাতিয়ার, যন্ত্রপাতি বা বস্তুসহ অনুরূপ যন্ত্র, যন্ত্রপাতি বা হাতিয়ারের কোন অংশ এবং ফিউজ, রকেট, পারকাশন ক্যাপস, ডেটোনেটর, কাট্রিজ ও যে কোন ধরনের গোলাবারুদও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১৪) "সম্পত্তি" অর্থ বস্তুগত বা অবস্তুগত, স্থাবর বা অস্থাবর, দৃশ্যমান বা অদৃশ্য যে কোন ধরনের সম্পত্তি ও উক্ত সম্পত্তি হইতে উদ্ভূত লাভ, এবং কোন অর্থ বা অর্থে রূপান্তরযোগ্য বিনিময় দলিলও (negotiable instrument) ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১৫) "সাক্ষ্য আইন" অর্থ Evidence Act, 1872 (Act I of 1872) ।
















অন্যান্য শব্দ ও অভিব্যক্তির প্রযোজ্যতা

৩।(১) এই আইনে ব্যবহৃত যে সকল শব্দ বা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা এই আইনে দেওয়া হয় নাই, সেই সকল শব্দ বা অভিব্যক্তি ফৌজদারী কার্যবিধি বা, ক্ষেত্রমত, দন্ডবিধিতে যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে প্রযোজ্য হইবে।

(২) অপরাধ ও শাসত্দির দায়-দায়িত্ব সংক্রান্ত দন্ডবিধির সাধারণ বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হইলে, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
















আইনের প্রাধান্য

৪। ফৌজদারী কার্যবিধি বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।
















অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ

৫। (১) যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের বাহিরে বাংলাদেশের কোন নাগরিক বা বাংলাদেশের সম্পদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ সংঘটন করে, যাহা বাংলাদেশে সংঘটিত হইলে এই অধ্যাদেশের অধীন শাস্তিযোগ্য হইত, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ বাংলাদেশে সংঘটিত হইয়াছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি ও অপরাধের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

     (২) যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের বাহির হইতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোন অপরাধ সংঘটন করে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশে সংঘটিত হইয়াছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি ও অপরাধের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

     (৩) যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তর হইতে বাংলাদেশের বাহিরে কোন অপরাধ সংঘটন করে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ ও উহা সংঘটনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশে সংঘটিত হইয়াছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি ও অপরাধের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।











দ্বিতীয় অধ্যায়
অপরাধ ও দণ্ড




সন্ত্রাসী কার্য

৬। (১) কেহ বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করিবার জন্য জনসাধারণ বা জনসাধারণের কোন অংশের মধ্যে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার বা অন্য কোন ব্যক্তিকে কোন কার্য করিতে বা করা হইতে বিরত রাখিতে বাধ্য করিবার উদ্দেশ্যে-

(ক) কোন ব্যক্তিকে হত্যা, গুরুতর আঘাত, আটক বা অপহরণ করিলে, বা কোন ব্যক্তির কোন সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করিলে; অথবা

(খ) দফা (ক) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য বস্তু, আগ্নেয়াস্ত্র বা অন্য কোন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করিলে বা নিজ দখলে রাখিলে;

তিনি "সন্ত্রাসী কার্য" সংঘটনের অপরাধ করিবেন।

(২) কেহ সন্ত্রাসী কার্য সংঘটন করিয়া থাকিলে, তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব বিশ বৎসর এবং অন্যূন তিন বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও আরোপ করা যাইবে।
















সন্ত্রাসী কার্যে অর্থ যোগান সংক্রান্ত অপরাধ

৭। (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে অর্থ, সেবা বা অন্য কোন সম্পত্তি সরবরাহ করেন বা সরবরাহ করিতে প্ররোচিত করেন এবং কোন সন্ত্রাসী কার্যের উদ্দেশ্যে উহা ব্যবহারের ইচ্ছা পোষণ করেন, বা ইহা সন্দেহ করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, উহা সন্ত্রাসী কার্যে ব্যবহার করা হইবে বা হইতে পারে, তাহা হইলে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থ যোগানের অপরাধ সংঘটন করিবেন।

(২) যদি কোন ব্যক্তি অর্থ, সেবা বা অন্য কোন সম্পত্তি গ্রহণ করেন এবং কোন সন্ত্রাসী কার্যের উদ্দেশ্যে ব্যবহারের ইচ্ছা পোষণ করেন, বা ইহা সন্দেহ করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, উহা সন্ত্রাসী কার্যে ব্যবহার করা হইবে বা হইতে পারে, তাহা হইলে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থ যোগানের অপরাধ সংঘটন করিবেন।

(৩) যদি কোন ব্যক্তি অর্থ, সেবা বা অন্য সম্পত্তির ব্যবস্থা করেন এবং কোন সন্ত্রাসী কার্যে উদ্দেশ্যে উহা ব্যবহারের ইচ্ছা পোষণ করেন, বা সন্দেহ করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, উহা সন্ত্রাসী কার্যে ব্যবহার করা হইবে বা হইতে পারে, তাহা হইলে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থ যোগানের অপরাধ সংঘটন করিবেন।

(৪) উপ-ধারা (১) হইতে (৩) এ বর্ণিত অপরাধে কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হইলে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক বিশ বৎসর ও অন্যূন তিন বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও আরোপ করা যাইবে।
















নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যপদ

৮। যদি কোন ব্যক্তি ধারা ১৮ এর অধীন কোন নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হন বা সদস্য বলিয়া দাবী করেন, তাহা হইলে তিনি অপরাধ সংঘটন করিবেন এবং উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনের জন্য তিনি অনধিক ছয় মাস পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ড, অথবা অর্থদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
















নিষিদ্ধ সংগঠন সমর্থন

৯। (১) যদি কোন ব্যক্তি ধারা ১৮ এর অধীন কোন নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করিবার উদ্দেশ্যে কাহাকেও অনুরোধ বা আহ্বান করেন, অথবা নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন বা উহার কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও উৎসাহিত করিবার উদ্দেশ্যে কোন সভা আয়োজন, পরিচালনা বা পরিচালনায় সহায়তা করেন, অথবা বক্তৃতা প্রদান করেন, তাহা হইলে তিনি অপরাধ সংঘটন করিবেন।

(২) যদি কোন ব্যক্তি কোন নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্য সমর্থন চাহিয়া অথবা উহার কর্মকাণ্ডকে সক্রিয় করিবার উদ্দেশ্যে কোন সভায় বক্তৃতা করেন অথবা রেডিও, টেলিভিশন অথবা কোন মুদ্রণ বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে কোন তথ্য সম্প্রচার করেন, তাহা হইলে তিনি অপরাধ সংঘটন করিবেন।

(৩) যদি কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহা হইলে তিনি অনধিক সাত বৎসর ও অন্যূন দুই বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও আরোপ করা যাইবে।
















অপরাধ সংঘটনে ষড়যন্ত্রের (criminal conspiracy) শাস্তি

১০। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তির দুই তৃতীয়াংশ মেয়াদের যে কোন কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; এবং যদি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহা হইলে অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব চৌদ্দ বৎসরের কারাদণ্ড হইবে, কিন্তু উহা পাঁচ বৎসরের কম হইবে না।
















অপরাধ সংঘটনের প্রচেষ্টার (attempt) শাস্তি

১১। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তির দুই তৃতীয়াংশ মেয়াদের যে কোন কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; এবং যদি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহা হইলে অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব চৌদ্দ বৎসরের কারাদণ্ড হইবে, কিন্তু উহা পাঁচ বৎসরের কম হইবে না।
















অপরাধে সহায়তার (abetment) শাস্তি

১২। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
















সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্ররোচিত (instigation) করিবার শাস্তি

১৩। যদি কোন ব্যক্তি তাহার স্বেচ্ছাধীন কর্মকাণ্ড অথবা অংশ গ্রহণের মাধ্যমে কোন দলিল প্রস্তুত বা বিতরণ করেন, অথবা কোন মুদ্রণ বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে কোন তথ্য সম্প্রচার করিয়া, অথবা কোন সরঞ্জাম, সহায়তা বা প্রযুক্তি বা প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনকে এইরূপ অবগত থাকিয়া সহায়তা প্রদান করেন যে, উক্ত দলিল, সরঞ্জাম, সহায়তা বা প্রযুক্তি বা প্রশিক্ষণ এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের কাজে ব্যবহৃত হইবে বা উক্ত ব্যক্তি বা সংগঠন উহাদের অনুরূপ অপরাধ সংগঠনের প্রচেষ্টায় ব্যবহার করিবে, তাহা হইলে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্ররোচিত করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন; এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তির দুই তৃতীয়াংশ মেয়াদের কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে তাহাকে দণ্ডিত করা যাইবে; এবং যদি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহা হইলে অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব চৌদ্দ বৎসরের কারাদণ্ড হইবে, কিন্তু উহা পাঁচ বৎসরের কম হইবে না।
















অপরাধীকে আশ্রয়প্রদান

১৪। (১) যদি কোন ব্যক্তি, অন্য কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন জানিয়াও বা উক্ত ব্যক্তি অপরাধী ইহা বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা সত্ত্বেও, শাস্তি হইতে রক্ষা করিবার অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তিকে আশ্রয়দান করেন বা লুকাইয়া রাখেন তাহা হইলে তিনি-

(ক) উক্ত অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হইলে, অনধিক পাঁচ বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও আরোপ করা যাইবে; অথবা

(খ) উক্ত অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ড হইলে, অনধিক তিন বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও আরোপ করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আশ্রয়দান বা লুকাইয়া রাখিবার অপরাধ স্বামী, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পিতা বা মাতা কর্তৃক হইলে, এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।











তৃতীয় অধ্যায়
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা




বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা

১৫। (১) বাংলাদেশ ব্যাংক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে কোন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন প্রতিরোধ ও সনাক্ত করিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে উহার নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব থাকিবে-

(ক) কোন ব্যাংক হইতে সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত প্রতিবেদন তলব এবং অনুরূপ প্রতিবেদন, আইনের অধীনে প্রকাশের অনুমোদন না থাকিলে, গোপন রাখা;

(খ) সকল পরিসংখ্যান ও রেকর্ড সংকলন ও সংরক্ষণ করা ;

(গ) সকল সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত রিপোর্টের ডাটা-বেজ সৃষ্টি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা;

(ঘ) সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা;

(ঙ) কোন লেনদেন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত সম্পৃক্ত মর্মে সন্দেহ করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে উক্ত লেন-দেনের হিসাব ত্রিশ দিনের জন্য বন্ধ রাখিবার উদ্দেশ্যে লিখিত আদেশ জারী করা এবং এইরূপে জারীকৃত আদেশ অতিরিক্ত ত্রিশ দিনের জন্য বর্ধিত করা;

(চ) ব্যাংকের কার্যাবলী পরিবীক্ষণ ও তদারক করা;

(ছ) সন্ত্রাসী কার্যে অর্থ যোগান প্রতিহত করিবার উদ্দেশ্যে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যাংকসমূহের নিকট নির্দেশনা জারী করা;

(জ) সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্তের উদ্দেশ্যে ব্যাংকসমূহ পরিদর্শন করা; এবং

(ঝ) সন্ত্রাসী কার্যে অর্থযোগানের সহিত জড়িত সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্ত ও প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।

(২) বাংলাদেশ ব্যাংক, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থযোগানের সহিত জড়িত সন্দেহজনক কোন লেনদেনের বিষয়ে কোন ব্যাংক বা ইহার গ্রাহককে সনাক্ত করিবার সঙ্গে সঙ্গে, উহা যথাযথ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করিবে এবং অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যে উক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করিবে।

(৩) সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মতি কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন ব্যাংকের কোন দলিল বা নথিতে কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রবেশাধিকার থাকিবে না।
















ব্যাংকের দায়িত্ব

১৬। (১) কোন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এই আইনের অধীন কোন অপরাধের সহিত জড়িত অর্থ লেনদেন প্রতিরোধ ও সনাক্ত করিবার লক্ষ্যে প্রত্যেক ব্যাংক যথাযথ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সহিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

(২) প্রত্যেক ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ (Board of Directors) উহার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কিত নির্দেশনা অনুমোদন ও জারী করিবে, এবং ধারা ১৫ এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা, যাহা ব্যাংকসমূহের জন্য প্রযোজ্য, প্রতিপালন করা হইতেছে কিনা উহা নিশ্চিত করিবে।

(৩) কোন ব্যাংক ধারা ১৫ এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা পালন করিতে ব্যর্থ হইলে, উক্ত ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ও নির্দেশিত অনধিক দশ লক্ষ টাকা জরিমানা পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে।











চতুর্থ অধ্যায়
সন্ত্রাসী সংগঠন




সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত সংগঠন

১৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত বলিয়া গণ্য হইবে, যদি উহা-


(ক) সন্ত্রাসী কার্য সংঘটিত করে বা উক্ত কার্যে অংশ গ্রহণ করে;

(খ) সন্ত্রাসী কার্যের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে;

(গ) সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনে সাহায্য করে বা উৎসাহ প্রদান করে;

(ঘ) সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত কোন সংগঠনকে সমর্থন এবং সহায়তা প্রদান করে; অথবা

(ঙ) অন্য কোনভাবে সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত থাকে।
















সংগঠন নিষিদ্ধকরণ

১৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার কোন সংগঠনকে সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রহিয়াছে মর্মে যুক্তিসঙ্গত কারণের ভিত্তিতে, আদেশ দ্বারা, তফসিলে তালিকাভুক্ত করিয়া, নিষিদ্ধ করিতে পারিবে।

     (২) সরকার, আদেশ দ্বারা, যে কোন সংগঠনকে তফসিলে সংযোজন বা তফসিল হইতে বাদ দিতে অথবা অন্য কোনভাবে তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।
















পুনঃনিরীক্ষা (Review)

১৯। (১) ধারা ১৮ এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ সংগঠন, আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে, উহার বিরুদ্ধে লিখিতভাবে, যুক্তি উপস্থাপনপূর্বক, সরকারের নিকট পুনঃনিরীক্ষার জন্য আবেদন করিতে পারিবে এবং সরকার, আবেদনকারীর শুনানী গ্রহণপূর্বক, আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হইতে নব্বই দিবসের মধ্যে উহা নিষ্পন্ন করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃনিরীক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে, উক্ত সংক্ষুব্ধ সংগঠন আবেদন নামঞ্জুর হইবার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করিতে পারিবে।

(৩) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়েরকৃত পুনঃনিরীক্ষার দরখাস্তসমূহ নিষ্পত্তির জন্য একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট পুনঃনিরীক্ষা কমিটি (Review Committee) গঠন করিবে।
















নিষিদ্ধ সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ

২০। (১) কোন সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হইলে সরকার, এই আইনে বর্ণিত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও, নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে, যথা : -

(ক) উহার কার্যালয়, যদি থাকে, বন্ধ করিয়া দিবে;

(খ) উহার ব্যাংক হিসাব, যদি থাকে, অবরুদ্ধ (freeze) করিবে এবং অন্যান্য হিসাব আটক করিবে;

(গ) সকল প্রকারের প্রচারপত্র, পোস্টার, ব্যানার, অথবা মুদ্রিত, ইলেক্ট্রনিক, ডিজিটাল বা অন্যান্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করিবে; এবং

(ঘ) নিষিদ্ধ সংগঠন বা উহার পক্ষে বা সমর্থনে যে কোন প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা, মুদ্রণ বা প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ করিবে ।

(২) নিষিদ্ধ সংগঠন উহার আয় ও ব্যয়ের হিসাব পেশ করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক মনোনীত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আয়ের সকল উৎস প্রকাশ করিবে।

(৩) যদি দেখা যায় যে নিষিদ্ধ সংগঠনের তহবিল এবং পরিসম্পদ (asset) অবৈধভাবে অর্জিত হইয়াছে অথবা এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হইয়াছে, তাহা হইলে উক্ত তহবিল এবং পরিসম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে।











পঞ্চম অধ্যায়
অপরাধের তদন্ত




পুলিশ কর্তৃক সাক্ষীকে পরীক্ষা সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

২১। (১) যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা এই আইনের অধীন কোন মামলার তদন্তকালে ঘটনা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত এইরূপ কোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করিবার প্রয়োজন মনে করেন এবং, যদি উক্ত ব্যক্তি ঘটনার বিবরণ লিখিতভাবে প্রদান করিতে যথেষ্ট সক্ষম মর্মে পুলিশ কর্মকর্তার জানা থাকে বা বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে, তাহা হইলে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা, উক্ত ব্যক্তির সম্মতিতে, ঘটনার বিবরণ উক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে লিখিতভাবে গ্রহণ করিতে পারিবেন।

     (২) উক্ত ব্যক্তি তাহার বক্তব্য বা ঘটনার বিবরণ স্বহস্তে কলম দ্বারা লিপিবদ্ধ ও স্বাক্ষর করিবেন।
















ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সাক্ষীর বিবৃতি রেকর্ড সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

২২। যে কোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, অথবা এতদুদ্দেশ্যে বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট যদি অবগত থাকেন বা তাহার বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, মামলার ঘটনা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত কোন ব্যক্তি তাহার বিবৃতি লিখিতভাবে প্রদান করিতে যথেষ্ট সমর্থ, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে তাহার বিবৃতি কলম দ্বারা স্বহস্তে লিখিতভাবে প্রদান করিতে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
















অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তি রেকর্ড সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

২৩। যে কোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, অথবা এতদুদ্দেশ্যে বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক স্বীকারোক্তিমূলক কোন বক্তব্য রেকর্ডকালে, যদি উক্ত ব্যক্তি ঘটনা সম্পর্কে লিখিতভাবে বিবৃতি প্রদান করিতে সক্ষম ও আগ্রহী হন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে তাহার স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য স্বহস্তে কলম দ্বারা লিপিবদ্ধ করিতে অনুমতি প্রদান করিবেন।
















তদন্তের সময়সীমা

২৪। (১) কোন পুলিশ কর্মকর্তা এই অধ্যাদেশের অধীন কোন মামলার তদন্ত কার্যবিধির ধারা ১৫৪ এর অধীন তথ্য প্রাপ্তি অথবা লিপিবদ্ধ করিবার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করিবেন।

(২) যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিতে না পারেন, তাহা হইলে, মামলার ডায়রীতে লিখিতভাবে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অনধিক পনের দিন সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৩) যদি উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিতে না পারেন, তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টের অথবা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন এলাকায় সংশ্লিষ্ট ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের লিখিত অনুমোদনক্রমে, অতিরিক্ত অনধিক ত্রিশ দিন সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৪) যদি উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত অতিরিক্ত বর্ধিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিতে না পারেন, তাহা হইলে তিনি অবিলম্বে কারণ উল্লেখপূর্বক সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টকে অথবা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন এলাকায় সংশ্লিষ্ট ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে কারণ উল্লেখপূর্বক ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করিবেন, এবং উল্লিখিত কারণ সন্তোষজনক না হইলে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
















কতিপয় মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে সময়সীমা বৃদ্ধি

২৫। (১) ধারা ২৫ এর উপ-ধারা (৩) এ নির্ধারিত অতিরিক্ত সময়সীমার মধ্যে এজাহার (FIR) এ উল্লিখিত অপরাধীর পরিচয় অনুদঘাটিত থাকায় এবং উক্ত অপরাধীকে সনাক্তকরণের অসমর্থতার কারণে কোন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্তকার্য সম্পন্ন করিতে ব্যর্থ হইলে, ধারা ২৫ এ উল্লিখিত অতিরিক্ত বর্ধিত সময়সীমার পরবর্তীতে যে কোন সময় কোন পুলিশ রিপোর্ট অথবা নূতনভাবে পুলিশ রিপোর্ট অথবা অতিরিক্ত পুলিশ রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে উহা বাধা বলিয়া গণ্য হইবে না।

(২) যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা অপরাধ সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য বা কোন রিপোর্ট সরবরাহ করিবার জন্য ধারা ২৫ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন অতিরিক্ত বর্ধিত সময় সীমার মধ্যে মেডিকেল, ফরেনসিক, আঙ্গুলের ছাপ, রাসায়নিক বা অন্য কোন বিশেষজ্ঞ সাক্ষীর, যাহার উপর তাহার নিয়ন্ত্রণ নাই এবং যাহা ব্যতীত মামলা সম্পর্কে কোন কার্যকর রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হয় না, অসমর্থতার কারণে তদন্তকার্য সম্পন্ন করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উক্ত উল্লিখিত অতিরিক্ত বর্ধিত সময়সীমার পরবর্তী যে কোন সময় পুলিশ রিপোর্ট পেশ করিতে উহা বাধা বলিয়া গণ্য হইবে না।
















পুনঃসমর্পণ (Remand)

২৬। (১) যেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তদন্তের জন্য আটক রাখা হয়, সেইক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশের হেফাজতে পুনঃসমর্পণের জন্য উপযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন বিবেচনাক্রমে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে পুলিশের হেফাজতে পুনঃসমর্পণ করিতে পারিবেন, এবং এইরূপ পুনঃসমর্পণের মেয়াদ একাদিক্রমে বা সর্বমোট দশ দিনের অধিক হইবে না :

তবে শর্ত থাকে যে, যদি তদন্তকারী কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রমাণ করিতে সমর্থ হন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অধিকতর মেয়াদের জন্য পুনঃসমর্পণ করা হইলে অতিরিক্ত সাক্ষ্য পাওয়া যাইতে পারে, তাহা হইলে ম্যাজিস্ট্রেট অনধিক পাঁচ দিন পর্যন্ত পুনঃসমর্পণের মেয়াদ বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।











ষষ্ঠ অধ্যায়
দায়রা জজ কর্তৃক বিচার




দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ কর্তৃক অপরাধের বিচার সম্পর্কিত বিধান

২৭। (১) ফৌজদারী কার্যবিধি অথবা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এতদুদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইবু্যনাল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ দায়রা জজ কর্তৃক বা, দায়রা জজ কর্তৃক অতিরিক্ত দায়রা জজের নিকট স্থানান্তরিত হইবার ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত দায়রা জজ কর্তৃক, বিচার্য হইবে।

(২) দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধ বিচারের সময় দায়রা আদালতে বিচারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফৌজদারী কার্যবিধির অধ্যায় ২৩ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিবেন।

(৩) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য বলিয়া গণ্য হইবে, এবং যে দায়রা ডিভিশনের অধিক্ষেত্রে উক্ত অপরাধ বা উহার অংশবিশেষ সংঘটিত হইয়াছে, উক্ত অধিক্ষেত্রের দায়রা জজের নিকট অপরাধের কার্যধারা রুজু করা যাইবে।











সপ্তম অধ্যায়
বিশেষ ট্রাইবু্যনাল কতৃক বিচার




সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন

২৮। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের দ্রুত ও কার্যকর বিচারের উদ্দেশ্যে, এক বা একাধিক সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রীম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন দায়রা জজ অথবা একজন অতিরিক্ত দায়রা জজের সমন্বয়ে গঠিত হইবে; এবং অনুরূপভাবে নিযুক্ত একজন বিচারক "বিচারক, সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল" নামে অভিহিত হইবেন।

(৩) এই ধারার অধীন গঠিত কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনালকে সমগ্র বাংলাদেশের স্থানীয় অধিক্ষেত্র অথবা এক বা একাধিক দায়রা ডিভিশনের অধিক্ষেত্র প্রদান করা যাইতে পারে; এবং উক্ত ট্রাইব্যুনাল কেবল এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধের মামলার বিচার করিবে, যাহা উক্ত ট্রাইব্যুনালে দায়ের বা স্থানান্তরিত হইবে।

(৪) সরকার কর্তৃক কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনালকে সমগ্র বাংলাদেশের অথবা এক বা একাধিক দায়রা ডিভিশনের সমন্বয়ে গঠিত উহার অংশ বিশেষের, স্থানীয় অধিক্ষেত্র ন্যস্ত করিবার কারণে একজন দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ কর্তৃক এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধের বিচারের এখতিয়ার ক্ষুণ্ণ হইবে না, এবং সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অনুরূপ কোন আদেশ প্রদান না করা হইলে দায়রা আদালতে নিষ্পন্নাধীন এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধের কোন মামলা বিশেষ স্থানীয় অধিক্ষেত্র সম্পন্ন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলী হইবে না ।

(৫) কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইয়াছে উক্ত সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনঃগ্রহণ, বা পুনঃশুনানী গ্রহণ করিতে, অথবা উপ-ধারা (৪) এর অধীন গৃহীত কার্যধারা পুনরায় আরম্ভ করিতে বাধা থাকিবে না, তবে ইতোমধ্যে যে সাক্ষ্য গ্রহণ বা উপস্থাপন করা হইয়াছে উক্ত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে কার্য করিতে এবং মামলা যে পর্যায়ে ছিল সেই পর্যায় হইতে বিচারকার্য অব্যাহত রাখিতে পারিবে।

(৬) সরকার, আদেশ দ্বারা, যে স্থান বা সময় নির্ধারণ করিবে সেই স্থান বা সময়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আসন গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উহার কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে।
















বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পদ্ধতি

২৯। (১) সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ কোন পুলিশ কর্মকর্তার লিখিত রিপোর্ট ব্যতীত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।

(২) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন অপরাধের বিচারকালে দায়রা আদালতে বিচারের জন্য, ফৌজদারী কার্যবিধির অধ্যায় ২৩ এ বর্ণিত পদ্ধতি, এই আইনের বিশেষ বিধানাবলীর সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, অনুসরণ করিবে।

(৩) কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রয়োজনীয় না হইলে, এবং কারণ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ না করিয়া, কোন মামলার বিচারকার্য স্থগিত করিতে পারিবে না।

(৪) যেক্ষেত্রে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক রহিয়াছেন বা আত্নগোপন করিয়াছেন যে কারণে তাহাকে গ্রেপ্তার করিয়া বিচারের জন্য উপস্থিত করা সম্ভব নহে এবং তাহাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের অবকাশ নাই, সেক্ষেত্রে উক্ত ট্রাইব্যুনাল, আদেশ দ্বারা, বহুল প্রচারিত অনূ্যন দুইটি বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে, অনুরূপ ব্যক্তিকে আদেশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে হাজির হইবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, এবং উক্ত ব্যক্তি অনুরূপ নির্দেশ পালন করিতে ব্যর্থ হইলে তাহার অনুপস্থিতিতেই বিচার করা হইবে ।

(৫) বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সামনে অভিযুক্ত ব্যক্তি উপস্থিত হইবার বা জামিনে মুক্তি পাইবার পর পলাতক হইলে অথবা উহার সম্মুখে উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হইলে, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত পদ্ধতি প্রযোজ্য হইবে না, এবং উক্ত ট্রাইব্যুনাল উহার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করিয়া অনুরূপ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেই বিচার করিবে ।

(৬) কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, উহার নিকট পেশকৃত আবেদনের ভিত্তিতে, বা উহার নিজ উদ্যোগে, কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে এই অধ্যাদেশের অধীন সংঘটিত অপরাধ সংশ্লিষ্ট যে কোন মামলা পুনঃতদন্তের, এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
















বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে কার্যবিধির প্রয়োগ

৩০। (১) ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে প্রযোজ্য হইবে, এবং আদি এখতিয়ার প্রয়োগকারী দায়রা আদালতের সকল ক্ষমতা উক্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের থাকিবে।

(২) বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ব্যক্তি পাবলিক প্রসিকিউটর বলিয়া গণ্য হইবেন।
















আপীল এবং মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন

৩১। (১) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ, রায় অথবা দণ্ড প্রদানের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে উহার বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করা যাইবে।

(২) এই আইনের অধীন কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড প্রদান করিলে, অবিলম্বে কার্যধারাটি হাইকোর্ট বিভাগে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাইবে না।
















জামিন সংক্রান্ত বিধান

৩২। এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারক জামিনে মুক্তি প্রদান করিবেন না, যদি না -

(ক) রাষ্ট্রপক্ষকে অনুরূপ জামিনের আদেশের উপর শুনানীর সুযোগ প্রদান করা হয়; এবং

(খ) বিচারক সন্তুষ্ট হন যে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিচারে দোষী সাব্যস্ত নাও হইতে পারেন মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে এবং তিনি অনুরূপ সন্তুষ্টির কারণসমূহ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করেন।
















বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মামলা নিষ্পত্তির নির্ধারিত সময়সীমা

৩৩। (১) বিশেষ ট্রাইবু্যনালের বিচারক মামলার অভিযোগপত্র গঠনের তারিখ হইতে ছয় মাসের মধ্যে মামলার বিচার কার্য সমাপ্ত করিবেন।

(২) বিচারক উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন মামলা সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ হইলে, তিনি উহার কারণ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করিয়া অনধিক তিন মাস সময়সীমা বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৩) বিচারক উপ-ধারা (২) এ নির্ধারিত বর্ধিত সময়ের মধ্যে বিচার কার্য সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ হইলে, তিনি, অনুরূপ ব্যর্থতার কারণ লিখিতভাবে উল্লেখ করিয়া হাইকোর্ট বিভাগ এবং সরকারকে অবহিত করিয়া, পুনরায় অনধিক তিন মাস সময়সীমা বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।











অষ্টম অধ্যায়
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হইতে উদ্ভূত সম্পদ




সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদের দখল

৩৪। (১) কোন ব্যক্তি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হইতে উদ্ভূত কোন সম্পদ ভোগ বা দখল করিতে পারিবেন না।

(২) সন্ত্রাসী বা অন্য কোন ব্যক্তি এবং এই আইনের অধীন অভিযুক্ত বা দণ্ডপ্রাপ্ত হউক বা না হউক, এইরূপ অন্য কোন ব্যক্তির দখলে থাকা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ, সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে।

ব্যাখ্যা।- সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ অর্থ এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে অর্জিত বা লব্ধ কোন অর্থ, সম্পত্তি বা সম্পদ।
















সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত

৩৫। যেক্ষেত্রে বিচারক এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন সম্পত্তি সন্ত্রাসী কার্য হইতে উদ্ভূত হইবার কারণে জব্দ বা ক্রোক করা হয়, সেইক্ষেত্রে, তিনি যে ব্যক্তির দখল হইতে উক্ত সম্পত্তি জব্দ বা ক্রোক করা হইয়াছিল, সেই ব্যক্তি এই আইনের অধীন অভিযুক্ত হউক বা না হউক, উহা বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
















সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণের পূর্বে কারণ দর্শাইবার নোটিশ জারী

৩৬। (১) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদানের পূর্বে, যে ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ অথবা দখলে উক্ত সম্পদ থাকে, উক্ত ব্যক্তিকে লিখিত নোটিশ প্রদানপূর্বক বাজেয়াপ্ত করিবার কারণ অবহিত না করিয়া এবং নোটিশে প্রদত্ত সময়সীমার মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের সুযোগ এবং শুনানীর যুক্তিসঙ্গত সময় প্রদান ব্যতিরেকে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-লব্ধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করা যাইবে না ।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন বাজেয়াপ্তির আদেশ প্রদান করা যাইবে না, যদি অনুরূপ ব্যক্তি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, উক্ত সম্পদ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে- লব্ধ সম্পদ ছিল তাহা তিনি অবগত ছিলেন না এবং উপযুক্ত মূল্যের বিনিময়ে তিনি তাহা খরিদ করিয়াছেন।
















আপীল

৩৭। (১) ধারা ৩৫ এর অধীন প্রদত্ত বাজেয়াপ্তকরণ আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি উক্ত আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করিতে পারিবেন।

(২) হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ধারা ৩৫ এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ সংশোধিত বা বাতিল করা হইলে অথবা এই অধ্যাদেশের কোন বিধান লংঘনপূর্বক কোন মামলা দায়ের করা হইলে, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধারা ৩৫ এর অধীন বাজেয়াপ্তির আদেশ প্রদান করা হইয়াছে, উক্ত ব্যক্তি খালাসপ্রাপ্ত হইলে উক্ত বাজেয়াপ্তকৃত সম্পত্তি ফেরত প্রদান করা হইবে এবং যদি উক্ত ব্যক্তির নিকট বাজেয়াপ্তকৃত সম্পত্তি ফেরত প্রদান সম্ভব না হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে উক্ত সম্পত্তি সরকারের নিকট বিক্রয় হইয়াছে গণ্যে, সম্পত্তি জব্দের দিন হইতে যুক্তিসঙ্গত সুদ গণনাপূর্বক এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে মূল্য নির্ধারণপূর্বক উহার মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে।











নবম অধ্যায়
পারস্পরিক আইনগত সহায়তা




পারস্পরিক আইনগত সহায়তা

৩৮। (১) যখন কোন সন্ত্রাসীকার্য এইরূপে সংঘটিত হয় বা উহার সংঘটনে এইরূপে সহায়তা, চেষ্টা, ষড়যন্ত্র বা অর্থায়ন করা হয় যাহাতে কোন বিদেশী রাষ্ট্রের ভূখন্ড সংশ্লিষ্ট থাকে, অথবা কোন সন্ত্রাসীকার্য বা উহার সংঘটনে সহায়তা, চেষ্টা, ষড়যন্ত্র বা অর্থায়ন কোন বিদেশী সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখন্ড হইতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অথবা বাংলাদেশের অভ্যন্তর হইতে অন্য কোন সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখন্ডে সংঘটিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত বিদেশী রাষ্ট্র অনুরোধ করিলে বাংলাদেশ সরকার, সন্তুষ্ট হইলে, এই ধারার পরবর্তী বিধানাবলী সাপেক্ষে, ফৌজদারী তদন্ত, বিচারকার্য বা বহিঃসমর্পন সম্পর্কিত সকল প্রয়োজনীয় বিষয়ে উক্ত বিদেশী রাষ্ট্রকে আইনগত সহায়তা প্রদান করিবে।

(২) অনুরোধকারী রাষ্ট্র এবং অনুরোধপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পাদিত আনুষ্ঠানিক চুক্তি কিংবা পত্র বিনিময়ের ভিত্তিতে আইনগত সহযোগিতার শর্তাদি নির্ধারণ করা হইবে।

(৩) এই আইনের অধীন কোন অপরাধের অভিযোগে বিচারের জন্য বাংলাদেশের কোন নাগরিককে এই ধারার অধীনে কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট সমর্পণ করা যাইবে না।

(৪) এই ধারার অধীন পারস্পরিক আইনগত সহায়তার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের কোন নাগরিককে, তাহার সম্মতি সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট ফৌজদারী মামলা বা তদন্ত কার্যে সাক্ষী হিসেবে সহায়তা প্রদান করিবার জন্য কোন বিদেশী রাষ্ট্র্রের নিকট সমর্পন করা যাইবে।

(৫) যদি সরকারের নিকট বিশ্বাস করিবার মত যথেষ্ট কারণ থাকে যে, কোন ব্যক্তিকে কোন মামলায় শুধুমাত্র তাহার গোত্র, ধর্ম, জাতীয়তা বা রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে বিচার করিবার বা শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে এই ধারার অধীন আইনগত সহায়তার জন্য অনুরোধ করা হইয়াছে, তাহা হইলে অনুরোধপ্রাপ্ত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ অনুরূপ কোন নির্দিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে বহিঃসমর্পণ বা পারস্পরিক আইনগত সহায়তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে।











দশম অধ্যায়
সাধারণ বিধানাবলী




অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিন অযোগ্যতা

৩৯। (১) এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমলযোগ্য (cognizable) হইবে।

(২) এই আইনের অধীন সকল অপরাধ জামিন অযোগ্য (non-bailable) হইবে।
















তদন্ত ও বিচার বিষয়ে পূর্বানুমোদনের অপরিহার্যতা

৪০। (১) জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোন পুলিশ কর্মকর্তা এই আইনের অধীন কোন অপরাধের তদন্ত করিতে পারিবেন না ।

(২) সরকারের পূর্বানুমোদন (sanction) ব্যতিরেকে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ (cognizance) করিবে না।
















বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হইতে মামলা স্থানান্তর

৪১। সরকার, সাক্ষ্য সমাপ্তির পূর্বে, বিচারের যে কোন পর্যায়ে, যুক্তিসঙ্গত কারণে, এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংক্রান্ত মামলা বা মামলাসমূহ কোন দায়রা আদালত হইতে কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বা কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হইতে কোন দায়রা আদালতে স্থানান্তর করিতে পারিবে।
















তফসিল সংশোধনের ক্ষমতা

৪২। সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, এই আইনের তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।
















বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৪৩। সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
















মূল পাঠ এবং ইংরেজী পাঠ

৪৪। এই আইনের মূল পাঠ বাংলাতে হইবে এবং ইংরেজীতে অনূদিত উহার একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ থাকিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
















রহিতকরণ ও হেফাজত

৪৫। (১) সন্ত্রাস বিরোধী অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ২৮ নং অধ্যাদেশ) এতদ্বারা রহিত করা হইল।

(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত অধ্যাদেশের অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।



















Copyright®2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs













http://www.a-z-az.blogspot.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন